প্রতিনিধি ২৭ মে ২০২৫ , ১:১৯:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম মহেশখালী-মাতারবাড়ী অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে এই এলাকাকে দেশের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিমুখী মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে দ্রুত অবকাঠামো উন্নয়নের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ ২৭ মে, মঙ্গলবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চট্টগ্রাম মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (এমআইডিআই)–এর অগ্রগতি পর্যালোচনায় উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম মাতারবাড়ীকে দেশের বৃহত্তম বন্দর, সরবরাহ, উৎপাদন ও জ্বালানির কেন্দ্র হিসেবে কল্পনা করি।এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে।’
এই লক্ষ্যে তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব দেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সহজতর করতে অবকাঠামো ও নগর উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সচিবালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের সচিবদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম মহেশখালী-মাতারবাড়ী অঞ্চলকে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে দ্রুত সংযুক্ত করতে সড়ক নির্মাণ ত্বরান্বিত করতে হবে। পাশাপাশি বৃহৎ সমুদ্রগামী কনটেইনার জাহাজের জন্য উপযুক্ত টার্মিনাল নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
এছাড়া তিনি শ্রমিকদের জন্য একটি পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ২৮ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া আড়াই দিনের জাপান সফরে এমআইডিআই অঞ্চলের উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে থাকবে। তিনি ৩০ মে টোকিওতে অনুষ্ঠেয় ৩০তম নিক্কেই ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ‘শিগেরু ইশিবার’ সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
এই সফরের লক্ষ্য হবে, মহেশখালী-মাতারবাড়ীর মতো কৌশলগত প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করা।
বৈঠকে জানানো হয়, জাপানের দ্বিতীয় একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের সম্ভাব্য স্থান হিসেবে এমআইডিআই অঞ্চল বিবেচনায় রয়েছে।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানের প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল ইতোমধ্যে সফলভাবে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে।
এছাড়া সৌদি আরবের আরামকো, রেড সি গেটওয়ে, আবুধাবি পোর্টস, জাপানের বিদ্যুৎ কোম্পানি জেরা এবং মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস ইতোমধ্যে এই অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে জাপানি প্রতিষ্ঠান পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এবং টিওএ কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)–র সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পটি এমআইডিআই উদ্যোগের অন্যতম ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ, সড়ক পরিবহন, নৌপরিবহন, জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিববৃন্দ। এমআইডিআই সেলের মহাপরিচালক সারওয়ার আলম চলমান প্রকল্পগুলোর একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন।