জাতীয়

বিএনপির ভোটের অধিকার নিয়ে কথা হাস্যকর: প্রধানমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ১৫ জুন ২০২৪ , ২:০২:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এই দেশের সমস্ত মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। মসনদে বসেই দল গঠন, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দিয়ে যে দলটি গঠন করে তাকে আবার জিতিয়ে আনার জন্য ভোট ভোট চুরির একটা প্রক্রিয়া এই দেশে শুরু করেছিলো। সেই বিএনপি যখন ভোটের অধিকার নিয়ে কথা বলে, তখন হাসি পায়।

শনিবার (১৫ জুন) সকালে গণভবনে কৃষক লীগের উদ্যোগে আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে পনেরই আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা যে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে শুধু তা নয়। তারা মানুষের গণতান্ত্রিক ধারাটাও নষ্ট করেছিলো।

“আজকে ভোটের অধিকারে কথা বলে, আমার খুব হাসি পায়। যখন দেখি বিএনপি উচ্চারণ করে, জনগণের ভোটের অধিকারের কথা বলে, নির্বাচনের কথা বলে। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এই দেশের সমস্ত মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। হ্যাঁ-না ভোট, আর সেই হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে যাত্রা শুরু, অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার জন্য।”

তিনি বলেন, ‘মসনদে বসেই দল গঠন, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দিয়ে যে দলটি গঠন করে তাকে আবার জিতিয়ে আনার জন্য ভোট ভোট চুরির একটা প্রক্রিয়া এই দেশে শুরু করেছিল। আবার জিয়াউর রহমানের পরে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে যখন ক্ষমতায় এরশাদ আসে তখনই এ দেশের জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে যারা ক্ষমতায় এসেছে তাদের সময় কৃষকরা অবহেলিত ছিলো উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এই দেশের কৃষক শ্রমিকরা সব সময়ই অবহেলিত থেকে যায়। এরশাদের পর আসলো খালেদা জিয়া, খালেদা জিয়া আসার পর দেখা গেলো শুধু জনগণের ভোট চুরিই না, এদেশের কৃষকের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, সার পাওয়া যাচ্ছে না। কৃষক আন্দোলন করেছে, আন্দোলনের পরে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়।’

ভোট চুরি করে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভোট চুরি করে ৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬ সালে একটা প্রহসনের নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে। মাত্র ২২ পার্সেন্ট ভোট পড়েছিল সেখানে। অধিকাংশ সরাসরি নির্বাচনে, কোনো প্রতিপক্ষ ছিল না। জনগণের ভোট চুরি করলে কেউ কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ এই ব্যাপারে খুব সচেতন।’

“১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয় খালেদা জিয়া দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে বলে বিরাট গর্ব, কিন্তু কি দেখা গেল? গনগণের আন্দোলনের ফলে ৩০ মার্চ তাকে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হলো। অর্থাৎ ভোট চুরির অপরাধেই কিন্তু তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।”

এ সময় কৃষি ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত নির্ভর করে কৃষির উপর, আমাদের অর্থনীতি কিন্তু কৃষি নির্ভর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং স্বাধীনতার পর পর সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। কৃষিকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করে মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করা, পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা এবং বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ দারিদ্র মুক্ত হবে, উন্নত জীবন পাবে সেখানে কৃষক মেহনতি মানুষ সকলের কথাই কিন্তু তিনি বলেছেন।’

“স্বাধীনতার পরে তিনি যে উদ্যোগগুলো নিয়েছিলেন তখনই বাংলাদেশ কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছিল। একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে তিনি গড়ে তুলে একটা স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করে যান। যখন তিনি গুনে ধরা সমাজ ভেঙ্গে তিনি নতুন একটা সমাজ গড়ে তুলার পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ ভাবে আত্মমর‌্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলার পদক্ষেপ নেন, তখনই উনাকে হত্যা করা হয়।”

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা মাত্র ৯ মাসের মধ্যে একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন এবং সেই সংবিধানে কিভাবে আমাদের দেশটাকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা যায় এবং কিভাবে আমাদের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষকে কিভাবে বাঁচানো যায় সেই দিক নির্দেশনাও সেখানে রয়েছে।’

আরও খবর

Sponsered content