জাতীয়

মুখ ফোলা হলেই কি কিডনি রোগ, না অন্য সমস্যার লক্ষণ, কি বলছেন চিকিৎসক

  স্বাস্থ্য ডেস্ক ১৩ মে ২০২৪ , ৪:০৮:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ


মুখ ফোলা হলেই কি কিডনি রোগ, না অন্য সমস্যার লক্ষণ, যা বলছেন চিকিৎসক
মুখ ফোলা হলেই কি কিডনি রোগ, না অন্যকিছুর লক্ষণ

অনেক সময় ঘুম থেকে উঠার পর আয়নায় মুখ দেখতেই মনে হয়, মুখ কিছুটা ফুলে গেছে বা ফোলাভাব। বিভিন্ন কারণেই মুখ ফোলাভাব হতে পারে। তবে মুখ ফোলাভাব দেখলে প্রথমেই অনেকের কাছে মনে হয়, এটি কিডনি রোগ কিনা। এ নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকে।

সাধারণত মুখ ফোলার সঙ্গে যদি কারও দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে, মুখে অরুচি, পায়ে পানি আসে, প্রস্রাব জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবে ফেনা, প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তন ও ব্যথার ওষুধ সেবনের সম্পৃক্ততা থাকে, তাহলে অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। কারণ নেফ্রোটিক সিনড্রোম, নেফ্রাইটিস বা কিডনি ফেইলিউর রোগীদের মুখ ফুলে থাকে।

সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. রোজানা রউফ। এ চিকিৎসকের ভাষ্যমতে―স্টেরয়েড সেবনের জন্য মুখ ফোলাভাব হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে যদি স্টেরয়েড খাওয়া হয় তাহলে ধীরে ধীরে অনেকের মুখ গোলাকার হতে থাকে। যা ‘মুন ফেস’ বা চাঁদমুখ বলা হয়।

সাধারণত বিভিন্ন ধরনের হারবাল ও কবিরাজি ওষুধে স্টেরয়েড থাকে। আবার কেউ কেউ অ্যালার্জি, ব্যথা-যন্ত্রণা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই স্টেরয়েড সেবন করেন। এ কারণেও মুখ ফোলাভাব হয়ে থাকে। স্টেরয়েড সেবনে মুখ ও পেট ফোললেও হাত-পা তুলনামূলক চিকনই থেকে যায়। এ ধরনের সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় কুশিং সিনড্রোম। আবার অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে কর্টিসল হরমোন বেশি মাত্রায় তৈরি হলেও এমন অবস্থা হতে পারে।

কখনো যদি হঠাৎ করে মুখ-চোখ-ঠোঁট ফুলে যায় এবং সঙ্গে ত্বকে অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা, গলায় চুলকানি দেখা দেয়, তাহলে অ্যানাফিল্যাকটিক শক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনটা হলে রোগীর রক্তচাপ হ্রাস পেয়ে মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে। এ অবস্থায় কালক্ষেপণ না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা না নিলে মৃত্যু হতে পারে।

অ্যানাফিল্যাকটিক শক মূলত কোনো খাবার, ওষুধ বা ইনজেকশন, রক্তসঞ্চালন বা বস্তুর সংস্পর্শে রোগীর অ্যালার্জি থাকার জন্য হয়ে থাকে। এ অবস্থায় যদি রোগীকে অল্প সময়ের মধ্যে অ্যাড্রিনালিন, স্টেরয়েড, অ্যান্টিহিস্টামিন ইনজেকশন, অক্সিজেন, বিটা অ্যাগোনিস্ট ও শিরায় স্যালাইন দিয়েও রক্তচাপ বাড়ানো সম্ভব না হয়, তাহলে রোগীকে আইসিইউতে নিতে হবে।

এছাড়াও নানা কারণে মুখ ফোলাভাব হতে পারে। সাধারণত ঘুম কম হলে চোখের নিচে কিছুটা ফোলা মনে হয়। অনেক সময় চোখের চারপাশে ফোলাভাব থাকলে কিছুক্ষণ বরফ ঘষলে তা ঠিক হয়ে যায়। আর চোখের নিচের পাতায় যদি ফোলাভাব থাকে তাহলে লবণ খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে এবং রাত না জেগে আগেই ঘুমিয়ে পড়তে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবেও এমন ফোলাভাব হয়ে থাকে। এ কারণে হাইপোথাইরয়েডিজমের রোগীদেরও মুখ ফোলা থাকে।

হাইপোথাইরয়েডিজমের রোগীদের হাত-পা ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্মরণশক্তি কমে যাওয়া, মাসিকে রক্তক্ষরণ বেশি হওয়া, নাড়ির গতি কম থাকা, ঘুম বেশি পাওয়া, পা ফোলা, চুল পড়ার লক্ষণ ও ত্বকের শুষ্কতা থাকে। তবে মুখ ফোলা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া উচিত

আরও খবর

Sponsered content