নিজস্ব প্রতিবেদক নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সংগঠিত ৩ খুনের বর্ণনা দিলেন রিমান্ডে থাকা ঘাতক ইয়াছিন। এ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বটি উদ্ধার করেছে বাড়ির কাছের একটি পুকুর থেকে।
গতকাল সোমবার দুপুরে বটি ও রক্তমাখা জামাকাপড় ভরা একটি ব্যাগ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ৮ এপ্রিল রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার ভাড়া বাসায় স্ত্রী লামিয়া আক্তার, তার ৪ বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ও লামিয়ার বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে লামিয়ার স্বামী ইয়াছিন একাই হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের রাস্তার পাশে চাপা দেয়। পরে ১১ এপ্রিল দুপুরে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয় এবং একই দিন পুলিশ ঘাতক ইয়াছিনকে আটক করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম জানায়, ইয়াছিনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন। ইয়াছিন একাই স্ত্রী-সস্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেছে। ইয়াছিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার সসন্তা আব্দুল্লাহ ও বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে নিয়ে মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার আক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ইয়াছিন গত ৮ এপ্রিল মঙ্গলকার সন্ধ্যায় স্ত্রীর ভাড়া বাসায় যায়। এ সময় স্বামী ইয়াছিন ও স্ত্রী লামিয়ার মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে লামিয়ার বড় বোন মানসিক রোগী স্বপ্না আক্তার বটি নিয়ে তেড়ে আসে ইয়াছিনের দিকে।
এ ঘটনায় ইয়াছিন ক্ষুদ্ধ হয়ে স্বপ্নার কাছ থেকে বটি কেড়ে নিয়ে তাকে কোপ দিতে যায়। স্ত্রী লামিয়া তাকে ফেরাতে গেলে এসময় স্ত্রী লামিয়ার গলায় কোপ দিলে দেহ থেকে গলা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ সময় স্বপ্না আক্তার ডাক চিৎকার দিলে ইয়াছিন স্বপ্নাকেও কুপিয়ে গলা, হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে। এরপর শিশু আব্দুল্লাহর গলায় থাকা তাবিজের সুতা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর ইয়াছিন লাশ তিনটি বস্তায় ঢুকিয়ে বাড়ীর কাছাকছি রাস্তার পাশে ইটাসুরকি দিয়ে চাপা দেয়। ইয়াছিন হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা বটি এবং তিনজনের রক্তমাখা জামাকাপড় একটি ব্যাগে ভরে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেয়।
এ ঘটনা ঘটানোর পর ইয়াছিন ঠান্ডা মাথায় লামিয়ার বাসায় বসবাস করতে থাকে এবং ঘুরে ঘুরে লাশ চাপা দেওয়া স্থানে পর্যবেক্ষণে রাখে। রিমান্ডে ইয়াছিন আরও জানায়, ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ১০ টার মধ্যে তিনি এ হত্যাকান্ড সে একাই ঘটিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, মাদকের টাকার জন্য ভাংচুরের অভিযোগে সৎ মায়ের দায়ের করা মামলায় ইয়াছিনকে পুলিশ ২৭ রমজান গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। ঈদুল ফিতরের ২ দিন আগে ইয়াছিন জামিনে ছাড়া পায়।