প্রতিনিধি ১ নভেম্বর ২০২৪ , ৬:২০:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
মাহবুবুর রহমান ভূইয়া. ডেমরা ঢাকা:
রাজধানীর সবুজবাগে ব্যবসায়ীক পূর্ব শত্রুতা ও পাওনা দেড় কোটি টাকা পরিশোধ না করার উদ্দেশ্যে মো. রমজান (৩২) নামে এক ব্যবসায়ীকে তার পার্টনাররা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মৃতের স্ত্রী লিজা আক্তার গত বুধবার (৩০ অক্টোবার) রাতে সবুজবাগ থানায় অভিযুক্ত খুনি জাহাঙ্গীর আলম, আজিম মিয়া, নাজির হোসেন, মাকসুদ ও ইকবাল সহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। বুধবার সন্ধা ৬ টার দিকে সবুজবাগ থানাধীন বাইগদিয়া এলাকার অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরের বাড়ীর বারান্দায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এদিকে খবর পেয়ে সন্ধা সাড়ে ৬ টার দিকে উদ্ধারের পর সুরতহাল শেষে লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে এ হত্যাকে ধামাচাপা দিতে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহতের নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে খুনিরাসহ পুলিশ। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সিসি ক্যামেরার ভিডিও ও মোবাইল কল রেকর্ড যাচাই করলে সব ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে লিজার দাবি।
এ ঘটনায় হত্যা মামলা না নেওয়ার কৌশল করে পুলিশ ও অভিযুক্তরা বলছেন, ডাকাতি করতে এসে গণপিটুনি খায় রমজান। এ সময় এলাকাবাসীর হৈচৈ ও হট্টগোলে পালানোর চেষ্টার সময় ছাদ লাফিয়ে পড়লে রমজানের মৃত্যু হয়। এদিকে ওই রাতে নিহত রমজানের ২ বন্ধু শরীফ ও রনিকে আটক দেখায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার ওই থানায় দায়ের করা ডাকাতি মামলায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এদিকে ময়না তদন্ত করতে গিয়ে ঢামেকে দায়িত্বরত ডাক্তার দেখেন রমজান তার চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সুরতহালের সঙ্গে মিল না পেয়ে ওই ডাক্তার সবুজবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইসমাঈল হোসেন কে খবর দিয়ে চোখে গুলিবিদ্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মামলা নিতে গড়িমসি করছে বলে মৃতের পরিবারের অভিযোগ।
মৃতের স্ত্রী লিজা জানায়, তার স্বামীর ক্রয়কৃত ২ টি ড্রেজারের ব্যবসার টাকা ভাগ না দেওয়ায় রমজানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঢাকার শনিআখড়ার বাসা থেকে গত বুধবার বিকালে মোবাইল ফোনে রমজানকে কল করে ডেকে নেয় খুনি জাহাঙ্গীর। ওই দিন সন্ধায় খবর পাই ডাকাতি করতে এসে রমজানের মৃত্যু হয়েছে।
লিজা আরও জানায়, জমি কেনাবেচার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গত দেড় থেকে ২ বছরের মধ্যে রমজানের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি ধার নেয় জাহাঙ্গীর। পরবর্তীতে ওই টাকার কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। এসব কারণেই রমজানকে হত্যার পরিকল্পনা করে জাহাঙ্গীর। তাই জাহাঙ্গীরের বাড়ীতে ডেকে নিয়ে রমজানকে রামদা ও ছুড়ি দিয়ে আঘাতের পর চোখে গুলি করে হত্যা করে খুনিরা। এ ঘটনায় পুলিশকে ম্যানেজ করে ডাকাতির নাটক সাজায় অভিযুক্তরা।
এ বিষয়ে সবুজবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মো.ইয়াছিন বলেন, নিহতের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১২টির মতো মামলা রয়েছে। এ ছাড়া আমরা জানতে পেরেছি নিহত রমজান নাকি ডাকাতি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। তবে তার স¦জনেরা বলছেন তাকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।