গণ মাধ্যম

অনলাইন পোর্টাল’ বিষয়ে সাত দফা সুপারিশ কমিশনের

  প্রতিনিধি ২২ মার্চ ২০২৫ , ৫:৩৫:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নীতিমালায় আইপিটিভি এবং অনলাইন পোর্টালে সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার করা যাবে না এমন নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা উচিত বলে মনে করে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।

শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।

প্রতিবেদনে ‘অনলাইন পোর্টাল’ বিষয়ে সাত দফা সুপারিশ করে কমিশন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনলাইন পোর্টাল একদিকে যেমন ব্যক্তি উদ্যোগ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংবাদভিত্তিক পোর্টাল চালুর পথে উৎসাহিত করছে, তেমনই এর নিয়ন্ত্রণহীন ও বিশৃঙ্খল বিকাশ বা প্রসার ঘটছে।

এই লাগামছাড়া বিস্তৃতি অনেকক্ষেত্রেই হলুদ সাংবাদিকতা, অনৈতিক ব্ল্যাকমেইলিং, নাগরিক হয়রানি এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে, তেমনইভাবে সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য অস্বাভাবিক প্রতিকূলতা তৈরি করছে। বিগত সরকারের অনলাইন নীতিমালা এক্ষেত্রে কার্যকর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে। তাই এই নীতিমালা পর্যালোচনা করে তা বাস্তবানুগ এবং কার্যোপযোগী করা প্রয়োজন।

নিবন্ধনহীন পোর্টালগুলো বন্ধের জন্য হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা আছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কিন্তু তা খুব একটা কার্যকর হয়নি। এ কারণে অনলাইন পোর্টাল কখন গণমাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত হবে, তা নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট শর্তাবলি থাকা দরকার।

গণমাধ্যমের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পাদকীয় যোগ্যতা ও দক্ষতা একটি দৈনিক পত্রিকা বা সম্প্রচারমাধ্যমের সমপর্যায়ের হওয়া এবং তার অনুরূপ বিনিয়োগ সামর্থ্য নির্দিষ্ট করা না হলে এই বিশৃঙ্খলা চলতেই থাকবে।’

বিগত সরকারের অনলাইন নীতিমালায় এই শর্তাবলি ঠিক করার দায়িত্ব প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের ওপর অর্পিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সম্প্রচার কমিশন গঠন না করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় তাদের মর্জি অনুযায়ী নিবন্ধন দিয়েছে, যাতে রাজনৈতিক বিবেচনাই প্রাধান্য পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে সংস্কার কমিশন।

কমিশনের সাত দফা সুপারিশ—

১. অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের নীতিমালা হালনাগাদ করা এবং এর আলোকে নিবন্ধন প্রদানের দায়িত্ব ও ক্ষমতা যেহেতু বিগত সরকারের প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের ওপর ন্যস্ত ছিল, সেহেতু তা গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের ওপর অর্পণ করা সমীচীন।

২. গত দশকে যেসব অনলাইনে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, তা যেহেতু কোনো স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট নীতির অধীনে হয়নি, বরং সরকারের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে, সেহেতু সেগুলো পর্যালোচনা প্রয়োজন। এ পর্যালোচনার দায়িত্ব স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা সমীচীন।

৩. অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার যে তদন্ত ব্যবস্থা রয়েছে, তার অবসান প্রয়োজন । এক্ষেত্রে সংবাদপত্রের ডিক্লারেশনের জন্য বিদ্যমান পুলিশের তদন্তব্যবস্থাই যথেষ্ট গণ্য করা যায়।

৪. অনলাইন পোর্টালগুলো নিবন্ধন পাওয়ার পর তার বার্ষিক নবায়ন পদ্ধতি বাতিল করা হোক।

৫. অনলাইন নীতিমালায় আইপিটিভি এবং অনলাইন পোর্টালে সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার করা যাবে না—এমন নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা উচিত। ৬. অনলাইন পোর্টালে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার আলোকে সরকারি বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. অনলাইন পোর্টালের জন্য ট্রেড লাইসেন্সের ফি সাধারণ ট্রেড লাইসেন্সের ফির কয়েক গুণ । এটি সংবাদমাধ্যমকে নিরুৎসাহিত করার নীতি। এর অবসান হওয়া উচিত।

এর আগে গণমাধ্যমকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে গত ১৮ নভেম্বর সরকার ১১ সদস্যের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কমিশনের প্রধান করা হয় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদকে।

আরও খবর

Sponsered content

আরও খবর: গণ মাধ্যম

কথিত  সাংবাদিক রিয়াজ শশুর বাড়ির টাকা আত্মসাৎ করে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ উঠেছে 

যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রকৃত সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে…প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

রূপগঞ্জে বয়োবৃদ্ধর চিকিৎসার ব্যয় বহন নিয়ে হাসপাতালে দু সংসারের লোকজনের মারামারি, সত্য গোপন রেখে সাংবাদিক রিয়াজের মিথ্যাচার

রূপগঞ্জে একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক রিয়াজকে ইট দিয়ে থেঁতলে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা

প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকের চাকরি যায়- এমন দেশে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি…মতিউর রহমান চৌধুরী

গণমাধ্যমের মালিকানার ক্ষেত্রে নীতিমালা দরকার…জুনায়েদ সাকি